’জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না কেন’ এই ছিলো ক্ষোভ। এই ক্ষোভে খুব একটা কণ্ঠ মিলাইনি কখনো। কারন নামে কীইবা এসে যায়? জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করলে তারা কায়ামাত ইসলামী দল বানিয়ে কার্যক্রম চালাবে। ঠেকাবে কে? ইতোমধ্যেই তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন দলের ব্যানারে। এখন সংঘবদ্ধ হয়ে গড়ে তুলছে নতুন দল।
শাহবাগের বিজয়ে আমরা উল্লাস করে ঘরে ঘরে ফিরে গেছি, জামায়াত ইসলামকে দল হিসেবে কোনঠাসা করে আমরা খুশি হয়েছি, কাদের মোল্লার কবর থেকে ‘শহীদ’ সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে আমরা উল্লাসে মেতেছি… আজ যখন তারা নতুন দল গড়ছে, তখন আমরা তাদেরকে গালি দিয়ে শান্তি খুঁজছি…
আবুল আলা মওদুদী আর গোলাম আজমের ‘আদর্শে’ তাদের একটাই এজেন্ডা, বাংলাদেশকে আবার পূর্ব পাকিস্তানে রূপান্তর করা। যেভাবে আমরা শাহবাগ অবরোধ করে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেছি, তারা স্বপ্ন দেখে একদিন এর প্রতিশোধ নেওয়ার।
এটা টি টুয়েন্টি ম্যাচ না। প্রায় অর্ধশত বছর আগে আমাদের অগ্রজেরা যেভাবে নিজের রক্ত দিয়ে লড়েছিলো এদের বিরুদ্ধে, আপনাকে আমাকেও সেভাবেই লড়তে হবে। যতদিন সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়।
বাংলার মাটি থেকে, বাংলার মানুষের মন থেকে এই পাকিস্তানী আদর্শ নিশ্চিহ্ন করার একটাই উপায়, নিজের শেকড়টা জানতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থা রাখতে হবে। দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখতে হবে। আপনার সামান্য ‘কনফিউশন’টাই এদের বিজয়। তারা আপনারই একজন সেজে, আপনারই বন্ধু হয়ে আপনার পক্ষে দশটি কথা বলে তারপর টুপ করে একটি ‘কিন্তু’ ঠেলে দেবে আপনার কোর্টে, আপনাকে কনফিউজড করবে। যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদের যোদ্ধা না হন, আপনি সেখানেই কুপোকাত হবেন।
এভাবেই তারা ঘরে ঘরে, দ্বারে দ্বারে, মানুষের মনে মনে ঢুকিয়ে দেয় দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, সন্দেহের বীজ। আপনাকে বিভক্ত করবে তারা, তারপর ধ্বংশ করবে।
তাই, বাঁচতে হলে জানতে হবে, লড়তে হলেও জানতে হবে। যুদ্ধ কোনো সহজ খেলা না, ছেলেখেলা না। খুব কঠিন…
আপনাকে জানতে হবে, স্পষ্ট হতে হবে, নির্দ্বিধা হতে হবে, পক্ষ নিতে হবে, সেই পক্ষের হয়ে লড়াই করতে হবে। আপনার আমার নিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ নেই আসলে…