বইমেলার শেষদিন বা শেষের আগেরদিন যখন কবি মারজুক রাসেলের ‘দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর’ বইটি কিনি, ততোক্ষণে বইটির নবম মুদ্রণ শেষ, দশম মুদ্রণ বাজারে। গোপন সূত্রে জানা গেলো প্রতি মুদ্রণে ৫০০ করে ছাপা হয়েছে, তার মানে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার কপি বিক্রি হয়ে গেছে!
[সংযোজন: প্রকাশনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বইমেলায় মোট ১৮টি মুদ্রণ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। এতো দ্রুত বিক্রি হচ্ছিলো যে দশম মুদ্রণের পর প্লেট বদল করার সময়টুকুও তারা পাননি।
এমনকি পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাবে অনেক পাঠককে ফিরতে হয়েছে খালিহাতে। একটি সংস্থার চাহিদা ছিলো ১০০০ বই, সেখানে প্রকাশনী সংস্থা সরবরাহ করতে পেরেছে মাত্র ১২০টি বেই।
১৮টি মুদ্রণ ৫০০ কপি করে হিসেব করলে অন্তত ৯ হাজার বই মেলাতেই বিক্রি হয়েছে। চাহিদা ছিলো আরো অনেক বেশি]
কবিতার বই যেখানে ১০০ কপি বিক্রি হলেই ‘বেস্ট সেলার’ তকমা পেয়ে যায়, সেখানে ১০ হাজার কপি বই বিক্রি হওয়া বিস্ময়কর অবশ্যই। বলা বাহুল্য অনেক জনপ্রিয় লেখকের বইও ১০ হাজার কপি বিক্রি হয় না। শুধু তা-ই না, এ বইয়ের জনপ্রিয়তা দেখে মারজুক রাসেলের পুরনো একটি কবিতার বইও প্রকাশক রিপ্রিন্ট করেন, সেটিও বিক্রি হয় তুমুল। বাংলা কবিতার বই বিক্রিতে এটা কোনো রেকর্ড কি না তা জানার উপায় নেই। রবিঠাকুর, জীবনানন্দ দাশের কবিতার বইও সম্ভবত ২৫ দিনে ১০ হাজার কপি বিক্রি হয়নি কোনোদিন। কাজী নজরুল ইসলাম অবশ্য এদিক দিয়ে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে। তাঁর বিদ্রোহী কবিতাটি প্রথম ছাপা হয়েছিলো বিজলী নামের এক সাপ্তাহিক পত্রিকায়। জনপ্রিয়তার ভোগে এক সপ্তাহেই দ্বিতীয় মুদ্রণ ছাপতে হয়, দুদফায় ছাপা এবং বিক্রি হয়েছিলো ২৯ হাজার কপি। ঘটনাটা ১৯২১ সালের। মারজুক কান্ডের ঠিক ১০০ বছর আগের।
[দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর- এর প্রচ্ছদ]
এতে অবশ্য অনেকেই খুশি না, মারজুক রাসেলকে কবি বলে স্বীকার করতেই অনেকের আপত্তি। যে হাজার দশেক পাঠক বইটি কিনেছেন তাঁরা কি বাংলা কবিতার প্রকৃত পাঠক? নাকি মারজুক রাসেলের টেলিভিশন ও অনলাইন জনপ্রিয়তার কারনে এমনটা ঘটেছে? মোস্তফা সারয়ার ফারুকীর নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পাওয়া কবি রিফাত চৌধুরীর বেলায় কিন্তু এমনটা ঘটেনি। অভিনেতা হিসেবে একসময় প্রবল জনপ্রিয়তা পাওয়া রিফাত চৌধুরী যে মূলত একজন কবি, তা দেশের অধিকাংশ মানুষ জানেই না। তাহলে মারজুক রাসেলের বেলায় কী ঘটলো?
অভিনয় ছাড়াও মারজুক রাসেল অনলাইনেও তুমুল জনপ্রিয়। ফেসবুকে তাঁর ফলোয়ার আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে। তাঁর রসঘন ফেসবুক পোস্ট শেয়ার হয় তুমুল। সেগুলোয় বেশিরভাগ সময়ই যৌনতার সুড়সুড়ি থাকে।
মারজুক রাসেলের কবিতার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ কী? বোঝার চেষ্টা করেছি অনেকবার। সম্ভবত যৌনতাই প্রধান ইস্যু। ’লাগাইতে পারতেছিনা’ ধরনের শব্দ অনেকের জন্য সহনশীল না। আবুল হাসান পছন্দ করেন এমন পাঠক মারজুক রাসেলকে গালি দেন। যদি বলা হয় আবুল হাসান লিখেছেন ‘উরুর কুয়োয় ডুবসাঁতার’, তখন সেই পাঠক বিস্মিত হন! এই বিস্ময়টা মজার।
আদতে যৌনতার সঙ্গে কবিতার কোনো সম্পর্কও যেমন নাই, বিরোধও নাই। দুটো স্বতন্ত্র বিষয়। কবিতা হয়ে উঠলো কি না সেটাই বিবেচ্য।
[মারজুক রাসেলের তুমুল আলোচিত কবিতা ‘অল্টারনেটিভ’ নিয়ে কবীর সুমন ওরফে সুমন চট্টোপাধ্যায় ওরফে সাতে পাঁচে নেই সুমনের পোস্ট]
দু’বছর আগে, ২০১৮ সালে মারজুক রাসেলের একটি কবিতা অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ে। সাদা কাগজে কম্পোজ করা কবিতার একটি ছবি। কবিতার নাম ‘অল্টারনেটিভ’।
“তোমার দেখা পাচ্ছি না; তোমাদের দেড়-তলা বাড়িটাকে দেখতেছি। বাদামি পর্দা-ওড়া-হালকা-খোলা জানালা দিয়ে যত ভিতর দেখা যায়, ছাদে শুকাতে দেয়া কাপড়চোপড়, ‘ফিরোজা+পিংক’-কম্বিনেশন ড্রেসে তোমাকে একদিন মার্কেটে দেখছিলাম; ওই ড্রেসটা কি ভিজাই থাকে, শুকাইতে দাও না, ছায়াতে শুকাও? গোপনে শুকাও?
তোমার এলাকার হোটেলগুলায় নাশতা; দুপুর, রাতের খাবার, টং-দোকানের চিনি-ছাড়া-কাঁচাপাতি-দুধ-বেশি-চা; চানাচুর, আপঝাপ, মিনারেল পানি, চুইংগাম, ক্রাকজ্যাক খাচ্ছি প্রশংসা করছি। তোমারে খাইতে পারতেছি না।
তোমার এলাকার রোদ, বৃষ্টি, ধুলাবালি, প্যাঁক, ময়লাটয়লা লাগায় বেড়াচ্ছি; তোমারে লাগানো হয়েই উঠতেছে না, হবে…
তোমার এলাকা ছাইড়া যাচ্ছি;
তোমারে ছাড়ার ফিলিংস হচ্ছে, হোক-
আমি অনেক-কিছুই-ছাইড়া-আসা-লোক!”
কবিতাটি নিয়ে বেশ হাসাহাসি হয়। প্রচুর নাক সিঁটকানোও হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই দেখা যায় ফেসবুকে নানান প্রসঙ্গে এই কবিতার উদ্ধৃতি উঠে আসছে। ‘তোমারে লাগানো হয়েই উঠতেছে না’র চেয়ে মানুষ বেশি আকৃষ্ঠ হচ্ছে ‘তোমারে ছাড়ার ফিলিংস হচ্ছে, হোক- আমি অনেক-কিছুই-ছাইড়া-আসা-লোক!’ জীবনমুখী গানের জনপ্রিয় শিল্পী কবীর সুমন এই কবিতার প্রশংসা করে মারজুক রাসেলের আরো কবিতা পড়ার আকাঙ্খা ব্যাক্ত করেন। সম্ভবত এই কবিতাটিই মারজুক রাসেলকে কবি হিসেবে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে। তৈরি হয় নতুন কবিতার নতুন পাঠক। আর এই সময়েই প্রকাশিত হয় মারজুক রাসেলের নতুন কবিতার বই ‘দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর’ বইটি। উল্লেখ্য আগে চারটি কাব্যগ্রন্থ থাকলেও গত দীর্ঘ ১৫ বছরে মারজুকের কোনো নতুন বই বাজারে আসেনি। বলাই বাহুল্য আগের বই চারটিও তেমন বিকোয়নি।
মজার কথা হচ্ছে ‘দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর’-এ কোনো নতুন কবিতা নেই। বলা যেতে পারে এটা মারজুক রাসেলের কবিতার সংকলন। পুরনো বই চারটি থেকে বাছাই করা কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে এ বই। তারচেয়ে মজার কথা হলো এ বইতে কিন্তু তুমুল জনপ্রিয় এবং সমালোচিত ‘অল্টারনেটিভ’ কবিতাটি স্থান পায়নি। বইটির প্রথম কবিতার নাম ‘কৈশোর’, সেটি পড়ে ফেলা যাক-
“ইশকুল নিজেই পড়তে আসে আমাদের বাড়ি, আমার কাছে-
মায়ের অজস্র স্নান, পুকুর-তো আমার আবাল্য বন্ধু।
নদীকেও আসতে হয় প্রয়োজনে-আমি সাঁতরালে প্রকৃত দুপুর,
পর্যাপ্ত জোয়ার, পাখিদের যত-খুশি এপার-ওপার,
মাঝে মাঝে বিশ্রাম-প্রসঙ্গ গাছ, ডালে, পাতার ছায়ায়,
ছায়ার অনেকে নিচের ছায়া, যাকে ভালোবাসে পারে যাবার মানুষ-
যারা ভালোবাসে, তাদের একটু দেখে রাখবেন মহাকাল!
আমাদের উঠোনের মাপে আকাশসীমানা-
ঘুড়ি, আমি তোমার আশ্রয়, বৃদ্ধির গন্তব্য বারো কিংবা তেরো,
যে-কোনো একটির সঙ্গে তিনশ পঁয়শট্টির সম্পর্ক গুণ দিলে
রোদের বোঝা পিঠে নিয়ে ফড়িং-স্বভাব।”
আমি কবিতা তেমন বুঝি না। জীবনানন্দ দাশ, বিনয় মজুমদার, রণজিৎ দাশ, উৎপল কুমার বসু, বুদ্ধদেব বসু, শঙ্খ ঘোষ প্রমুখের কবিতার ভক্ত বড়জোর। এর বেশি তেমন কবিতাজ্ঞান নেই। কিন্তু মারজুকের ‘কৈশোর’ কবিতাটি আমার খারাপ লাগে না। আমি পরের কবিতাগুলো পড়তে থাকি একে একে।
“আত্মীয়বাড়িতে যাবার সময় মিষ্টান্ন নেয়ার যতগুলো নিয়ম রয়েছে, তার থেকে একটিকে বেছে নিয়ে
শহর-শহর দূরে, আমরা হেঁটে-হেঁটে বাড়ি ফিরি। চপ্পল ছিঁড়েছে, বামহাত ওদের দু’জনকে আরো কিছুক্ষণ ধরে রাখবে। পায়ে জমেছে ধুলোর আস্তর; পুকুরকে ধুলো দিয়ে আসি। ঘরে যাই-চাবি ছাড়াও মায়ের আঁচলে আমিওতো বাঁধা থাকি।”
কিংবা
“নিয়ম, তার আবার অনুবর্তিতা
ইশকুল-ইশকুল খেলা বন্ধ যাদু-
আমাদের নাম কেটে দিন হাজিরার খাতা থেকে।
আমরা পড়ব ঘুড়ি ওড়াবার পর বাতাসের পত্রলেখা।
আমাদের নাম লিখেছে রোদ্দুর, যদ্দুর পেরেছে-
আমরা উড়বো ঘুড়ি-সঙ্গে-ঘুড়ি, পতাকার অনেক ওপরে।
আমাদের নাম ছিঁড়ে দিন-
আপনার হাত যত-শত-টুকরো করতে পারে মহাশয়।
সবাই জানুক, আপনার জানা এই নাম আকাশপ্রবণ।”
‘প্রেম’ নামের ছোট্ট কবিতাটিও ভালো লাগে
“আলোতে তাকাও।
-অন্ধকার।
আঁধারে তাকাও।
-অন্ধকার।”
এই বইতেও বেশ ‘লাগালাগি’র কবিতা আছে, দুষ্টগন্ধ আছে। কিন্তু তবু মারজুক রাসেলের কবিতা পড়তে আমার খারাপ লাগে না। এর পেছনে যদিও মারজুকের টেলিভিশন বা অনলাইন জনপ্রিয়তার কোনো অবদান নাই। কারন মারজুক রাসেলের কোনো নাটকই সম্ভবত আমি দেখিনি, সিনেমা ব্যাচেলর দেখেছিলাম। অনলাইনেও আমি তাঁর বন্ধু বা ফলোয়ার নই। কবি মারজুক রাসেলেই আমি সন্তুষ্ট থাকি।
[কবি, গীতিকার ও অভিনেতা মারজুক রাসেল]
যদিও মারজুক রাসেলকে আমি কবি পরিচয়ের আগে গীতিকার হিসেবে চিনি। বলতে গেলে যখন সঞ্জীব চৌধুরী মারজুক রাসেলকে জেমসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন, সেই গত শতকের শেষদিকে। তখন জেমস সবে ‘গুরু’ খ্যাতি পাচ্ছেন। আমিও একটা পত্রিকায় মূলত মিউজিক বিভাগটা দেখাশোনা করি এবং সেই সুবাদে জেমস ভাইয়ের উত্তরার বাড়িতে বা পরিমলদার সাউন্ড গার্ডেনে আড্ডা হয়, তখন থেকে মারজুক রাসেলকে আমার চেনা হয়। চেনা হয় ‘হাউজি’, ‘রাখে আল্লাহ্ মারে কে’, ‘দয়াল’, ‘দে দৌড়’, ‘পত্র দিও’, ‘কথা নয় মুখে মুখে’, ‘পাখি উড়ে যা’, ‘শরাবে শরাব’, ‘জাত যায়’ প্রভৃতি গানের সুবাদে। ‘মীরাবাঈ’ গানটা ছিলো সবচেয়ে জনপ্রিয়, কিন্তু সেটা আমার আবার পছন্দের তালিকায় ছিলো না কখনোই। কিন্তু ব্যাচেলরের ‘গোল্লায় নিয়ে যাচ্ছে আমায় হাওয়াই রঙের গাড়ি’, ‘আমি তো প্রেমে পরিনি’, ‘আমার পাগলা ঘোড়া রে’, ‘ঈশান কোনের বায়ু’ কিংবা থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার চলচ্চিত্রের ‘বাহির বলে দূরে থাকুক, ভেতর বলে আসুক না’ গানগুলো তুমুল ভালো লাগে আমার।
লুৎফর রহমান রিটন ভাই এবং অন্যদের লেখার সূত্রে ব্যাক্তি মারজুক রাসেলের অতীত জানা হয়। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া মারজুক রাসেল বাবার জুটমিলের চাকরির সূবাদে খুলনায় থাকতেন। ছোটবেলাতেই জুটমিলের অফিসার শ্রেণীর একজনের কন্যাকে ভালো লাগার সূত্রে পরিচয় হয় শ্রেণী বৈষম্যের সঙ্গে। মারজুকের প্রেমে পড়ার অপরাধে চাকরি যায় বাবার। মারজুক রাসেলের ঠাঁই হয় মাদ্রাসায়। বন্ধুহীন রাসেল বন্ধু খোঁজেন খুলনার বিভিন্ন গ্রন্থাগারে বইয়ের পাতায় পাতায়, বাম রাজনীতিকদের বক্তৃতার উত্তেজনায়। আর চুপে চুপে অক্ষর বোনেন। কবি হওয়ার ইচ্ছে জাগে মনের ভেতর। একসময় শুধু ‘কবি’ হওয়ার বাসনায় ঢাকায় চলে আসেন। অনাহারে অর্ধাহারে, ফুটপাথে রাত্রি যাপনে, সিনেমার টিকিট কালোবাজারীতে কিংবা হকারিতে খুঁজে নিয়েছেন কবিতা আর জীবনের উপাদান। পত্রিকায় কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ, শাহবাগে আজীজে আড্ডা ইত্যাদি চলে অভাব আর অনটনের ফাঁকে ফাঁকে। একে একে প্রকাশিত হয় ‘শান্টিং ছাড়া সংযোগ নিষিদ্ধ’, ‘চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো’, ‘বাঈজি বাড়ি রোড’, ‘ছোট্ট কোথায় টেনিস বল’ কাব্যগ্রন্থগুলো। যথারীতি পাঠক পায়না। যদিও ততোদিনে তাঁর লেখা গান বাংলার হাটে মাঠে ঘাটে লোকের মুখে মুখে।
কবিতার জন্য এই স্ট্রাগল মারজুক রাসেলকে কবি হিসেবে টিকিয়ে রাখবে না। এই নাটুকে জনপ্রিয়তাও না। আগে যে রিফাত চৌধুরীর কথা বললাম, কবি হিসেবে তাঁর স্ট্রাগলও কম না। এমনকি তুমুল জনপ্রিয় হয়েও টিভি নাটকের মিছে জনপ্রিয়তার মোহে না পড়ে রিফাত চৌধুরী ফিরে গিয়েছেন কবিতার কঠিন জগতেই। তবু রিফাত চৌধুরীর বই বিক্রি হয় না তেমন।
গীতিকার, মডেল, অভিনেতা, ফেসবুক সেলিব্রেটি ইত্যাদি পরিচয়ের ছেড়ে দিয়ে হলেও মারজুক রাসেল সম্ভবত এখনো শুধু কবি পরিচয়টাকেই ভালোবাসেন। তুমুল জনপ্রিয়তা আর বইয়ের বিক্রি তাঁর সামনে হাজির করেছে এক নতুন সুযোগ। কবিরা পাঠকের অনাদরে আড়ালে আবডালে থাকেন। এতো পাঠকের দরবারে যাবার সুযোগ খুব বেশি কবি পান না সাধারণত। পাঠক কবিকে গ্রহণ করবে নাকি বর্জন করবে সেই পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার সুযোগই অনেকের হয় না। আম পাঠক পর্যন্ত পৌঁছানোই হয় না বেশিরভাগ কবির। এখানে মারজুক রাসেল একটা বড় সুবিধা পেয়েছেন। নিজের কবিতা অন্তত বিপুল সংখ্যক পাঠকের সামনে পর্যন্ত নিয়ে যেতে পেরেছেন। এটা একটা বড় ঘটনা। এখন এটাই প্রমাণ করার দায়, যে এই ১০ হাজার ক্রেতা আদতে কবিতার পাঠক।
মারজুক রাসেলের পরের বইটার জন্য অপেক্ষা করবো। জানতে আগ্রহী এই ১০ হাজার ক্রেতা সত্যি সত্যি কবিতার পাঠক হয়ে উঠতে পারলেন কি না। অপেক্ষায় নজরুদ্দি…
বই: দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর
কবি: মারজুক রাসেল
প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত
প্রকাশক: বায়ান্ন
প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০২০
মূল্য ২০০ টাকা