রাইফেল, রোটি, আওরাত... রক্তের অক্ষরে লেখা

রাইফেল, রোটি, আওরাত... রক্তের অক্ষরে লেখা

১.
২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় একটি বাড়িতে একটি পরিবার। এই ছিলো একটি নাটকের প্লট। যুদ্ধ দেখাবো না, কোনো বন্দুক পিস্তল কামান শহর কিছুই দেখাবো না… শুধু একটি বাড়ির ইন্টেরিয়রে একটি পরিবারের সেই দুঃসহ রাতটা যাপনের গল্প বলবো ভেবেছিলাম, ভোরে ছাদে উড়তে থাকা লাল সবুজ পতাকাটা নামিয়ে বুকে চেপে ধরে কান্নার গল্পটা বলতে চেয়েছিলাম, ভোররাতে ঢাবির হল থেকে পালিয়ে আসা দুই যুবকের আতঙ্কটা দেখাতে চেয়েছিলাম, অথচ এই বাড়ির ছেলেটি এখনো ফেরেনি… মা অপেক্ষায়, উৎকণ্ঠায়…

অনেক যত্ন নিয়ে লিখেছিলাম। তারপর একজন মুক্তিযোদ্ধা, যিনি ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, এখনো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রচুর কাজ করছেন এরকম একজনকে পড়তে দিযেছিলাম স্ক্রিপ্টটা। পড়ে উনি বলেছিলেন, একটা কথা কি জানো? শহরে সেনাবাহিনী ট্যাঙ্ক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, দিগ্বিদিক গুলি করছে, শহর জ্বালিয়ে দিচ্ছে, দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে সবাইকে মারছে…
পরদিন একটা শহরজুড়ে শুধু লাশ আর রক্ত। বাবার লাশের সামনে নির্বিকার বসে আছে সন্তান… সন্তানের লাশের সামনে স্তব্ধ বসে আছে পিতা…
এই যে অনুভূতি, এটা পৃথিবীর কারো পক্ষেই অনুভব করা সম্ভব না। কল্পনায় অনেক আতঙ্ক ফুটিয়ে তোলা যাবে হয়তো, কিন্তু ঐ সময়টা আসলেই তোমরা কল্পনা করতে পারবে না… প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছাড়া এই বীভৎসতা অনুমান করা সম্ভব না।

রাইফেল রোটি আওরাত বইটি পড়তে পড়তে আমি এর সময়টা চিন্তা করি… ২৫ মার্চ রাত থেকে ২৮ মার্চ রাত পর্যন্ত… ঢাকা শহরের বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সময়টার প্রত্যক্ষদর্শী একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যিনি চোখের সামনে সেই রাতে হাজার হাজার ছাত্রকে মরতে দেখেছেন গুলি খেয়ে, মরতে দেখেছেন প্রতিবেশি শিক্ষকদেরকে, নিজে বেঁচেছেন স্রেফ ভাগ্যগুনে… তারপরে এই লাশের শহরে, লুটের শহরে, আতঙ্কের শহরে, কিংকর্তব্যবিমূঢ় একটা সময় কাটিয়েছেন… তাঁর বয়ানে আমরা সেই শহরটার গল্প শুনি। চিরকালের প্রিয় ঢাকা শহরের সেই রূপটা আমাদের সম্পূর্ণ অচেনা। যে শহরে আমরা আড্ডা মারি, চা খাই, চুমু খাই, সিনেমা দেখি, হ্যাং আউট করি… সেই শহরটা… সেই ঢাকা শহরটা…

রাইফেল রোটি আওরাত আমাকে নিয়ে যায় অন্য এক শহরে…

২.
মাত্র তিনদিনের পটভূমিতে আনোয়ার পাশা ফুটিয়ে তোলেন পাকিস্তান কনসেপ্টটা কতোটা অকার্যকর ছিলো, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ কনসেপ্টটা কতোটা অপরিহার্য ছিলো।
তিনদিনের অভিজ্ঞতায় রচিত হয় একটি জাতির সমস্ত বঞ্চনার ইতিহাস, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের গোটা প্রেক্ষাপট।
সাদা কালো লাল নীল হলুদ সবুজ সব রঙের মানুষগুলো এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোনো গ্রে এরিয়া থাকে না। কপালে যখন বন্দুক এসে ঠেকেছে, তখন পক্ষ দু'টোই… বাঁচা অথবা মরা, হারা অথবা লড়া, সাদা অথবা কালো…
এতো বছর পরেও যখন কেউ কেউ কনফিউশনের দোহাই দিয়ে ৭১ এ কিছু স্বাধীনতাবিরোধীর কর্মকাণ্ড জায়েজ করার চেষ্টা করে তখন বুঝতে পারি ‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’ বইটির প্রয়োজনীয়তা।
যুদ্ধের ফল কী হবে, ক্ষমতা কার থাকবে এসব ভাবনায় রেখে আনোয়ার পাশাকে পক্ষ নিতে হয়নি। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজের পক্ষ বেছে নিতে তাঁকে একটুও ভাবতে হয়নি।

‘রাইফেল, রোটি, আওরাত আমার কাছে তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনন্য একটি দলীল, অন্যতম জরুরীপাঠ্য একটি উপন্যাস। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে হাজার হাজার বই লেখা হয়েছে। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা অনেক লেখা হয়েছে… কিন্তু এই উপন্যাসের মতো এতোটা স্পষ্টভাবে সেই কালরাত্রি এবং তৎপরবর্তী সময়ের বীভৎসতা আর কোথাও ফুটে ওঠেনি। বাংলাদেশের পক্ষে বিপক্ষের চরিত্রগুলো এতো স্পষ্টভাবে সমকালীন আর কোনো সাহিত্যে আসেনি।
ঐ আমলের এমনকি দিনপঞ্জীগুলোও পরবর্তীকালে ব্যক্তির অবস্থান অনুযায়ী অনেক পরিমার্জন করে ছাপা হয়েছে, এমনকি বহুল পঠিত জাহানারা ইমামের বিখ্যাত ‘একাত্তরের দিনগুলি'ও। কিন্তু ‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’ এই দোষ থেকে মুক্ত অনেকটা। পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের দালালেরা বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে, আনোয়ার পাশাও শহীদ হন। আর বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে, ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুরুর আগে। সেই হিসেবেও এই বইটি গুরুত্বপূর্ণ।

৩.
বইটির ভূমিকায় লেখা আছে ‘মানুষ এবং পশুর মধ্যে বড় একটা পার্থক্য হচ্ছে পশু একমাত্র বর্তমানকেই দেখে, মানুষ দেখে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে একসঙ্গে বিবেচনা করে।’
‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’ পড়তে পড়তে আমি অবাক হই… ধ্বংসস্তুপ, মৃত্যুগহ্বর, লাশের আর অনিশ্চয়তার শহরে বসে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর সবগুলো প্রেক্ষাপট কিভাবে তুলে ধরেন ছোট একটি উপন্যাসে?
উপন্যাসের মূল চরিত্র সুদীপ্ত শাহিন, যাঁর মাতৃকুল অবাঙ্গালী, পৈত্রিক সূত্রে মুসলমান হলেও যিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। আশেপাশের সব ঘরে পাকিরা ঢুকে সবাইকে গুলি করে মারলেও সুদীপ্ত শাহিনের ঘরে বই ছাড়া আর কিছু নেই দেখে যারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কী চমৎকারভাবে জ্ঞান আর অস্ত্রের লড়াইটা তুলে আনেন আনোয়ার পাশা!

পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বীভৎস হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী হলেও যে সুদীপ্ত শাহিন কী ভীষন মানবিক… ওয়াজেদ যখন বলে ‘সময় এলে এবার দেখবেন স্যার, দেশকে বিহারিশূন্য করে ছাড়ব।’ তখন সুদীপ্ত বলেন ‘কাজটা সেই পাঞ্জাবিদের মতো হবে, আমরা এখন যাদেরকে প্রবলভাবে ঘৃণা করছি। আমরা চাইছি নির্ভেজাল গণতন্ত্র! তার অন্যতম মূল কথাটি হচ্ছে বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে কাউকে শাস্তি দেওয়া হবে না। এবং মতামতের স্বাধীনতার সঙ্গে তার দায়-দায়িত্বটাও হবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত।’

সুদীপ্তর বন্ধু আওয়ামী লীগার ফিরোজকে দেখি আমরা। দেখি দালাল খালেক মালেককে। স্বজনকে হত্যার পরেও যাদের পাকিপ্রেমে কোনো ঘাটতি হয় না! উল্টো সাফাই গায় ‘আর্মির জেনারসিটি দেখুন, মেয়েদের ফেরৎ পাঠাবার সময় চিকিৎসার জন্য তিন শো টাকাও দিয়েছে। দে আর কোয়াইট সেন্সিবল ফেলো।’

স্বামী মনিরুজ্জামানের লাশের পাশে আহত জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুর্দাকে পেয়ে যখন মনিরুজ্জামানের স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুর্দার দরজায় আঘাত করে বলেন ‘দিদি, বের হন। আপনার সাহেবকে ঘরে নিন। আমার সাহেব মারা গেছেন। আপনার সাহেব এখনও বেঁচে আছেন।’
এই একটা মুহূর্তই আসলে মুক্তিযুদ্ধের অনেক কিছু বলে দেয়। এরকম আরো অসংখ্য মুহূর্ত আনোয়ার পাশা তৈরি করে গেছেন ছোট্ট এক উপন্যাসে।
সেই অষ্টাদশী জননীর কথা মনে পড়ে, যে আশ্রয় দিয়েছিলো হাসিম সেখকে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক থেকে জগন্নাথ হলের ছাত্র, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যুদ্ধ করা হাসিম শেখ থেকে রোকেয়া হলের হামিদা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরানী থেকে যুদ্ধের ডামাডোলে ব্যবসায়ী হয়ে যাওয়া হাশমতের বদলে যাওয়া, ফিরোজের প্রতিবেশী আফরোজা সাবীর… এরকম অসংখ্য চরিত্র দিয়ে পূর্বাপর মুক্তিযুদ্ধের নির্ভেজাল ক্যানভাস পাঠকের সামনে তুলে ধরেন আনোয়ার পাশা।

৪.
ফিরোজের চাচা গাজী সাহেব, জামায়াতে ইসলামীর নেতা… দেশের সঙ্গে তার গাদ্দারী… গোলাম আজম গংদের গাদ্দারীর ইতিহাস স্পষ্ট হয়ে থাকে রাইফেল, রোটি আওরাতে।
অথচ মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীকালে লেখা অনেক বইতেই এই দালালদের কথা দায়সারাভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা লক্ষনীয়।

আর সবশেষে বুলা… আর জামাল সাহেব। এই মৃত্যু উপত্যকার বিভীষিকা পাঠকের মনে গেঁথে দিয়ে আনোয়ার পাশা বুনে দেন নতুন স্বপ্নের বীজ। সবাই যখন কীংকর্তব্যবিমূঢ়, পালাচ্ছে তখন বুলা আর জামালরা জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

২৫ মার্চ রাতে যে ভয়ঙ্কর মৃত্যু আতঙ্ক দিয়ে সুদীপ্ত শাহিনের রাত শুরু হয়েছিলো। মাত্র তিনদিন পরেই ২৮ মার্চ রাতেই “সুদীপ্ত শুতে গেলেন। মেঝেতে ঢালাও বিছানা। সারি সারি তাঁরা শুয়েছেন যতো জনের শোয়া সম্ভব। আর এদের একজনকেও তিনি চেনেন না। সব থেকে বেশি চেনেন জামাল সাহেবকে, কিন্তু সে পরিচয়েই সূত্রপাত হয়েছে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে। হ্যাঁ, ঠিকই তো হয়েছে। নব পরিচয়ের সূত্রপাত হয়েছে। পুরনো জীবনটা সেই পঁচিশের রাতেই লয় পেয়েছে। আহা তাই সত্য হোক। নতুন মানুষ, নতুন পরিচয় এবং নতুন একটি প্রভাত। সে আর কতো দূরে। বেশি দূরে হ’তে পারে না। মাত্র এই রাতটুকু তো! মা ভৈঃ। কেটে যাবে।”

যুদ্ধ যখনো পুরোদমে শুরু হয়নি, যখনো দেশের মাত্র লাখ খানেক পাগল বোকা মানুষ ছাড়া বাকী কোটি কোটি মানুষ ‘কী হয় কী হয়’ চিন্তায় মশগুল… তখন এতোটা কনফিডেন্টলি এই কথাগুলো আর কোনো লেখক লিখতে পেরেছেন বলে আমার জানা নাই।
শুধু লেখক হইলেই হয় না, কইলজা লাগে…

৫.
এই উপন্যাসের সাহিত্যমূল্য? আমি আলাদা করে কখনো খুঁজতে যাইনি। এই উপন্যাসটা রক্তের মূল্যে লেখা। সাহিত্য বা কাব্যিক উপমা দিয়ে একে কোমল করলে সেটা অপ্রয়োজনীয় হতো মনে করি।
পাশাপাশি বর্ণনায় একটা নিরাসক্ত নির্বিকার ব্যাপার আছে পুরো উপন্যাস জুড়ে। আমার কাছে মনে হয়েছে এই ভয়াবহ নৃশংসতার নিজস্ব একটা এক্সপ্রেসন আছে, এটা ধরে রাখাটাই সবচেয়ে জরুরী ছিলো। বাড়তি কিছু যোগ না করাটাই ভালো হয়েছে।
আর ঐ সময়টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রায় সারা রাত না ঘুমিয়ে ভোরের দিকে গুলি-গোলার আওয়াজ কিছুটা কম হতেই ছেলে মেয়েরা একটু ঘুমিয়েছে। এখনো ঘুমিয়েই আছে তারা। কিন্তু স্বামী স্ত্রী কেউ ঘুমোন নি। কেউ কাউকে কথাও খুব একটা বলেননি। স্ত্রী আমিনার চোখে কেমন একটা নির্বিকার ভাব। স্বামী এখন কোথায় যেতে চায়, এখনি বেরুতে গেলে কোন বিপদ হতে পারে কি না, একান্তই যদি বেরুতে চায়, কতক্ষণে তবে ফিরতে পারবে- ইত্যাদি বহু প্রশ্নই তো এখন আমিনার থাকার কথা। কিন্তু কোন প্রশ্নই স্ত্রীর চোখে সুদীপ্ত দেখলেন না। এখন সুদীপ্তও যেন কেমন হয়ে গেছেন। তা না হলে এমন নিরুৎসুক, যেন প্রাণহীন স্ত্রীকে রেখে কি বেরিয়ে পড়তে পারতেন? মেয়েটার হল কি- এমন একটা প্রশ্ন অন্ততঃ একবারও তো মনে জাগতে পারত। কিন্তু জাগেনি। বিশ্বাস, বিস্ময়, উৎসাহ এবং কৌতূহলের যে সকল গ্রন্থি জীবনকে নানা জগৎ-ব্যাপারের সঙ্গে গ্রথিত রাখে তার সব কটি কি মরে গেছে সুদীপ্তর মধ্যে? তা হলে এখন বাইরে বেরুনোর ঝোঁকটাই বা মাথায় চাপে কেন?

সময়টা যে এরকম নির্বিকার, নিরুৎসুক, প্রাণহীনই ছিলো।

৬.
এরকম একটা দুঃসহ সময়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও, একেবারে শূন্য হাতেও সুদীপ্ত শাহিনরা স্বাধীন একটি দেশের স্বপ্ন দেখতে পেরেছিলেন। হতাশায় মুষড়ে পরেননি। যে অল্পকিছু পাগল বোকা মানুষ এই স্বপ্নটা দেখতে পেরেছিলেন, তাদের জন্যই দেশটা পাকিস্তানের বগলমুক্ত হতে পেরেছে।
যুদ্ধের পরে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা লিখেছেন, তাঁরাও কয়জন যুদ্ধের মাঝখানে বসে এই কথাগুলো লিখতে পারতেন তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। মনে রাখতে হবে আনোয়ার পাশা কোনো বিজয়ীর গল্প লেখেন নাই। ভয়ঙ্কর অসম্ভব এক স্বপ্নই গেঁথেছেন শুধু। এমনকি সেই স্বপ্নের সাফল্যটুকুও দেখে যেতে পারেননি তিনি। এই স্বপ্ন, এই স্বপ্নভাষা, এই বক্তব্যটা একেবারে সলিড… স্যালুট।

এখন যখন ট্রাফিক জ্যামে বসে ‘এই দেশটার কিসসু হইবো না বাল’ বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে ইচ্ছে হয় আমাদের… কোনো একটা বিপ্লবী ইস্যু পেলেই ফেসবুকে দেশকে ‘ভালোবাসার’ নামে কষে গালি দেই দুটো, তারপর পপকর্ণ খেতে খেতে সিনেমা দেখি সিনেপ্লেক্সে, দেশের বিরুদ্ধে অপশক্তির উত্থান দেখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাঁচতে চাই… তখন এই উপন্যাসটা আমাকে স্বপ্ন দেখায়… আমাকে হতাশ হতে দেয় না।

“রাইফেল, রোটি, আওরাত” এর শক্তি এখানেই

৭.
বই: রাইফেল, রোটি, আওরাত
লেখক: আনোয়ার পাশা
ধরণ: উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ: জুন, ১৯৭৩
প্রকাশনী: স্টুডেন্ট ওয়েজ
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী
মূল্য: একশত পঁচিশ টাকা
গুডরিডস লিঙ্ক

[২৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে সচলায়তনে প্রকাশিত]

comments powered by Disqus